পাবনা : ১৮ ডিসেম্বর, পাবনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন পাবনা কলেক্টরেট ভবনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পাবনা জেলাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করা হয়।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও তখন জেলার সুজানগর ও সাঁথিয়াতে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ চলছিল।
প্রায় তিন দিনের এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর্মুখী আক্রমনে হানাদাররা পাবনা ছেড়ে পালিয়ে গেলে উৎফুল্ল মুক্তিযোদ্ধাসহ হাজার হাজর মুক্তিকামী মানুষ পাবনা কালেক্টরেট ভবনে এসে সমবেত হয়। সেখানে পাকিস্তানী পতাকা আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে পাবনাকে অনুষ্ঠানিকভাবে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির আনন্দ উদযাপনে উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে ঐতিহাসিক পাবনা মুক্ত দিবস। দিবসটি উপলক্ষে রাত বারটা এক মিনিটে শহরের আব্দুল হামিদ সড়কে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এ সময় শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা শত্রুমুক্ত হলেও পাবনা ছিল হানাদার পাক বাহিনীর দখলে। পাবনার অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তীব্র লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে ১৮ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় তারা।
এই গৌরবময় আনন্দের দিনটির কথা নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে। পাবনার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, পাক বাহিনী আর তার দোসর দের হত্যাযজ্ঞ,নির্মমতার কথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীতে আরো বর্ধিত কলেবরে পাবনা মুক্ত দিবস পালন করা হবে।
এমপি প্রিন্স বলেন, বিএনপি জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতা বিরোধীরা যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার আর কোন সুযোগ না পায় সে ব্যপারে সতর্ক থাকার আহবানও জানান তিনি। পরে ফানুস উড়িয়ে আতশবাজি ফোটানোর মধ্য দিয়ে মুক্তির আনন্দ উদযাপন করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সর্দার মিঠু আহমেদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ খান, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান রকি, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহমেদ শরীফ ডাবলু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সেলিম আহমেদ প্রমুখ।
এদিকে পাবনা মুক্ত দিবস উপলক্ষে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১, পাবনা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।