কক্সবাজার : সবুজ পাহাড়, প্রকৃতির অনাবিল সুন্দরের টানে পর্য়টন মৌসুমে শুরুতে কক্সবাজারে ছুটে আসছে পর্যটকেরা। বিজয়ে দিবসের ছুটি যোগ হওয়ায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল।
শুধু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতই নয়, রামুর বৌদ্ধ বিহার, হিমছড়ি, ইনানী, মহেশখালী, সোনাদিয়া ও ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি
পার্কসহ জেলার পর্যটনকেন্দ্র গুলোতেও বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপচে পড়া ভিড় পড়েছে।
পর্যটন মৌসুম শুরু এবং ডিসেম্বরে স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ায় পর্যটক আসা শুরু হওয়ায় কক্সবাজারের প্রায়
চারশো হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজগুলোকেও সাজানো হয়েছে নতুন সাজে।অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করেছে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বপরিবারে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন রবিউল হাসান।
তিনি বলেন, এত বিশাল সমুদ্রের সামনে এলেই মন ভালো হয়ে যায়। তাই ভ্রমণের কথা এলেই প্রথমেই চলে আসে কক্সবাজারের নাম। আসলেই ভ্রমণের জন্য অসাধারণ একটি জায়গা। খাগড়াছড়ির পিপলু রাখাইন বলেন, আমরা পাহাড়ের মানুষ। সাগর তো টানবেই। এছাড়া সারা বছরই কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে হয়। ডিসেম্বর বাচ্চাদের পরীক্ষা শেষ হলে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয়। আর একমাত্র কক্সবাজারেই তো আছে এত বড় সমুদ্র সৈকত।
কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেন রাঙামাটির মেয়ে দীপা দাশ। দীপা বলেন, স্বপ্নের সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্থ দেখা, বালুকা বেলায় ছোটাছুটি, সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন শোনার অনুভূতি কী সাধারণ কিছু? আর সমুদ্রের লোনাজলে গা ভাসানোর লোভ কে সামলাতে পারে। তাই সময় পেলেই সৈকতে আসার চেষ্ঠা করি।
বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল সামলাতে এবং পাঁচদিনের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলেল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাথন চন্দ্র বলেন, পর্যটকেরা যেন কোনভাবেই হয়রানি বা প্রতারণার শিকার না হন সেজন্য জেলা প্রশাসনের একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ক্রমে সমুদ্র সৈকতসহ আশাপাশের পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন। সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র (ইনবক্স)। যে কোনো অভিযোগ এখানে করতে পারবে পর্যটকরা।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে টুরিস্ট
পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্য়টকদের নিরাপত্তা দিতে রাত-দিন ২৪টি ঘণ্টা ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। এছাড়া বিচ বাইক, বাই সাইকেল, জেডেস্কি টহলসহ বিভিন্নভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু কক্সবাজার সৈকত নয়, সৈকতের আশপাশে যেসব পর্যটন কেন্দ্রগুলো আছে হিমছড়ি, ইনানীসহ আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পর্যটকদের চাপ সামলানোর পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশ এবং ব্যস্ততম বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সাদা পোশাকেও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে।