প্রত্যেকেই পৃথিবীতে ভালভাবে বাঁচতে চায়। বর্তমানে হাজার-লাখ টাকার কথা কেউ চিন্তা না করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন করে। কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা। সবার মধ্যে একটা স্বপ্ন থাকে যদি কোটিপতি হতাম তাহলে অনেক ভাল কাজ করতাম। স্বপ্ন দেখা বা আরাম আয়াশের কথা চিন্তার কথা দোষের কিছু না। তবে পৃথিবীতে কোটিপতির সংখ্যা কিন্তু দিনদিন বাড়ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের দেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। কঠিন পরিশ্রম, অধ্যাবস্যায় ও সঠিক দিক নির্দেশনায় নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে একদিন মানুষ তার নিজস্ব গন্তব্যে ঠিকই পৌছায়। কোটিপতি বা ধনী হওয়ার প্রথম প্রদক্ষেপ হল তরূন সময়ে সঞ্চয় করে অর্থ জমানো ও বুদ্ধিমত্তার সাথে সেগুলো নানান কাজে ব্যবহার করে প্রথম পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া।
কোন কাজ করলে আপনি ভাল করতে পারবেন। আগে সেই বিষয়ে আপনার ভালবাসা ও আগ্রহ আছে কিনা লক্ষ্য করতে হবে। এমন কিছু করতে হবে যার ভবিষৎ আছে। আপনি যদি কাজকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নেন তাহলে একদিন আপনি ধনী হবেন। কঠোর অধ্যাবসায় ও কায়িক পরিশ্রমের দ্বারা যারা আজ সফল তাদের ফলো করতে হবে। কিভাবে তারা কাজ করত, তাদের আশেপাশে কি ঘটছে তারা দেখত, কেমন করে কাজে ডুবে থাকতো, তাদের জীবনমান কেমন ছিল আর কিভাবে তারা একদিন সফলতা পেল।
যাদের জীবনে কোন লক্ষ্য নেই তাদের সাথে চলাফেরা বন্ধ করে দিন। তাদের সাথে ঘোরাফেরা করেন যাদের নির্দিষ্ট একটি গোল আছে। যাদের স্বপ্ন আছে বড় হওয়ার, লক্ষ্য থাকে বড় কিছু করার তাদের সাথে চলাফেরার চেষ্টা করুন। জীবনে বড় কিছু করার জন্য অন্যের ভৎসনা ও উপহাস অপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে।
আমাদের দেশে একটি কালচার বা স্বপ্ন হয়ে গেছে ভালমত পড়াশোনা করে একটা সরকারি বা ভাল একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারলে জীবনে আর কিছুই লাগবে না। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পেছনে টাকা ব্যয় করতে করতে একটা সময় হতাশায় বেকারগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তাই একদিকে লক্ষ্য না রেখে চাকরির পাশাপাশি অন্য কোন কাজকে সহায়ক হিসেবে নিলে সফলতা আসবেই।
আমাদের মধ্যে নিজেকে জাহির করার প্রবনতা অনেক বেশি তা পরিহার করতে হবে। কারন জাহির করতে গিয়ে অযথা আপনার কষ্টার্জিত টাকার ক্ষতি হয়। প্রয়োজন ছাড়া কোন কাজই জীবনে কাজে আসে না।
আপনি কোন কাজকে প্রাধান্য দিবেন সেই বিষয়ে আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। কারন প্রবাদ আছে লক্ষ্যহীন জীবন মাঝিবিহীন নৌকার মত। লক্ষ্য ঠিক করতে এদিক ওদিক ছুটে না চলে ভাবুন আপনি চলছেন কিন্তু কোথায় যাবেন কিভাবে যাবেন তা জানেন না। তাই নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যান।
দৈনন্দিন সব কাজে বেহিসেবি খরচ না করে সব কাজের হিসেব মিলিয়ে রাখুন। আপনার প্রত্যেকটি কাজের হিসেব নকদর্পনে থাকলে এবং পূর্ণ হিসেব সঠিক থাকলে তবেই আপনি ধনীদের কাতারে নাম লেখাতে পারেন। কেউ আপনাকে কিপ্টা বা কৃপন ভাবলে কোন কিছুই আসে যায় না বড় হতে গেলে।
একদিক থেকে উপার্জনের কথা চিন্তা না করে এমন কোন উপায় বের করতে হবে যা থেকে বাড়তি উপার্জন আসে তার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। উপার্জন অনুযায়ী আয়ের থেকে ব্যয় কমিয়ে সঞ্চয় বাড়ানোর মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। নিয়মিত সঞ্চয় করার মাধ্যমে আপনার নির্দিষ্ট লক্ষ্যের পিছনে ব্যয় করুন তাতে সফলতা আসবেই।
কোন কিছুর করার আগে সঠিক পরিকল্পনা করে অর্থ বিনিয়োগ করুন। আর যদি দেখেন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে লাভ কম হচ্ছে সেক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে অন্য কোথাও বিনিয়োগ করুন। ধরা যাক, কোথাও আপনি চাকরি করেন প্রথমে বেতন পাবেন আর পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই টাকা মাসে স্বাচ্ছন্দে কাটাতে পারেন। কিন্তু যদি দেখেন তা থেকে কিছু টাকা অযথাই ব্যয় হচ্ছে সেগুলো থেকে বিরত থেকে কিছু কিছু করে সঞ্চয় করুন এবং সেই টাকা একসাথে করে অন্য কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করুন।
ব্যবসা করতে গেলে টাকার প্রয়োজন হয় কিন্তু সেই টাকা যদি ধার বা লোনের মাধ্যমে করেন তা থেকে কোন ভাবেই আপনি লাভবান হবেন না। তাই চেষ্টা করুন ধার নিলেও তা যেন আপনার ক্ষতি সাধিত না হয় তা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে আমাদের দেশে সুদের টাকা দেওয়ার প্রবনতা আছে। তা থেকে বিরত থাকুন।
নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে ছোট ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনেক ছোট ব্যবসায়ে লাভ বেশি থাকে যেগুলো আবার চাকরির পাশাপাশি করা যায়।
রা/চৌ