মানিকগঞ্জ পৌর এলাকায় পুরাতন নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত হ্যালোবাইক চলাচলে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। টাকার বিনিময়ে পৌর কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে নতুন করে হ্যালোবাইকের নিবন্ধন দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় জড়িত হ্যালোবাইক মালিক ও চালকেরা বাদ পড়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মানিকগঞ্জ পৌর হ্যালোবাইক মালিক-শ্রমিক সমিতির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়।
সমিতি সভাপতি হজরত আলী লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ সময় সমিতির অন্যান্য সদস্য এবং সাধারণ মালিক ও চালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য ও সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার নিবন্ধিত হ্যালোবাইক রয়েছে ৫৫০টি। প্রতি বছর এক হাজার টাকা ফি দিয়ে নিবন্ধন নবায়ন করা হয়। তবে এ বছর সকল নিবন্ধন বাতিল করে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এর বদলে নতুন করে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে পৌর হ্যালোবাইক মালিক-শ্রমিক সমিতির সভাপতি হজরত আলী বাদি হয়ে মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে।
তবে মামলার তোয়াক্কা না করে আগের নিবন্ধন করা হ্যালোবাইক নবায়ন না করে পৌর কর্তৃপক্ষ নতুন সাত শতাধিক হ্যালোবাইক নিবন্ধন করে দেয়। নতুন নিবন্ধিত প্রতিটি হ্যালোবাইকের মালিকের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেওয়া হয়। এসব টাকা কাউন্সিলর ও মেয়রের মধ্যে বণ্টন করা হয়। পুরাতন নিবন্ধিত হ্যালোবাইক মালিক-চালকেরা উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদেরকে নম্বর প্লেট ও চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী হ্যালোবাইক মালিক ও চালক ইউসুফ আলী বলেন, গত ১০ বছর ধরে পৌর এলাকায় হ্যালোবাইক চালিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে আসছেন। তাঁর নিবন্ধন নম্বর ১৭০। এ বছর তাঁর হ্যালোবাইকের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। লাইসেন্সের জন্য ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূরুল ইসলাম এবং পৌর মেয়র রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো কাজ হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, কারো কারো হ্যালোবাইক না থাকলেও টাকার বিনিময়ে তাঁদেরকে নম্বর প্লেট দেওয়া হয়েছে। আবার কারো কারো একাধিক নম্বর প্লেট দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে পৌর মেয়র মো. রমজান আলী বলেন, সব হ্যালোবাইকের নম্বর প্লেট দেওয়ার সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিরদের সুপারিশের ভিত্তিতে শহরে শৃঙ্খলা আনতে নতুন করে হ্যালোবাইকের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। যাঁরা নিবন্ধন পাননি, তাঁরা এসব মিথ্যা ও বানোয়াট কথা বলছেন।