মোস্তাক আহম্মেদ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)ঃ গেলো ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন মো. আব্দুল আলীম। তিনি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক। এবার সায়েস্তা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় নেতা কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আলীম তার ছোট ভাই ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মো.আব্দুল হালিমকে দিয়ে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করান। ওই নির্বাচনে তিনি আনারস প্রতীকের চীফ এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে আব্দুল হালিমকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হলেও আব্দুল আলীম রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
আগামী ২০ এপ্রিল সায়েস্তা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হয়ে ব্যানার, ফেস্টুনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরব রয়েছেন তিনি। এ নিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে ওঠেছে সমালোচনার ঝড়। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা তাকে গ্রীণ সিগনাল দিয়েছেন বলেও আলীম সমর্থনকারীরা বলে বেড়াচ্ছেন। অপরদিকে, উপজেলা আওয়ামীলীগ কমিটির পদে থেকে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতাকারী আব্দুল আলীম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় প্রতিবাদ মূখর হয়ে ওঠেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এর আগে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবীও ওঠেছিলো। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীকে পদ দেয়া হলে দলের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে বলেও নেতাকর্মীরা দাবী করেন।
সায়েস্তা ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. তমিজ উদ্দিন বলেন, ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় নৌকার বিরোধিতাকারী হিসেবে আব্দুল আলীমকে বহিষ্কারের দাবী করা হয়। তারপরেও সে কিভাবে সভাপতি প্রার্থী হয় সেটা আমার বোধগম্য নয়।
সায়েস্তা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আল মামুন টিপু বলেন, আলীম নৌকার বিরোধিতা করেছে এটা সত্য। সে জন্য তৃনমূল পর্যায় থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবীও ওঠেছিলো। আমি পূনরায় সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়ায় আলীম সম্পর্কে আর কোনো মন্তব্য করতে পারছিনা।
মো.আব্দুল আলীম বলেন, ইউপি নির্বাচনে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম । দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। তখন নির্বাচন থেকে সরে চুপচাপ ছিলাম। সে নির্বাচনে ছোট ভাই প্রার্থী হলে তার আগেও ছিলাম না, পিছেও ছিলাম না। নির্বাচনে এজেন্ট থাকার কথাও অস্বীকার করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মমতাজ বেগম এমপি ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল মাজেদ খানকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমান শহিদ বলেন, একটা অপরাধ দেখে আরেকটি অপরাধ করতে উৎসাহ পায়। বিগত উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করেছিলেন। শাস্তি দিতে হলে সেখান থেকে শুরু করতে হবে। তারপরেও আমরা আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে চাই।
আ/লি