আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ১৯৮৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ম্যারিল্যান্ডের বাল্টিমোর শহরে একটি মাধ্যমিক স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত তিন কিশোর ৩৬ বছর কারাভোগের পর তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।।
১৯৮৩ সালের ‘থ্যাংকসগিভিং ডে’তে তিন কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ১৪ বছরের এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে তারা। হার্লেম পার্ক জুনিয়র হাই স্কুলের হলওয়ে ধরে লাঞ্চ করতে যাচ্ছিল ওই কিশোর।
তার পরনে ছিল তখনকার জনপ্রিয় জর্জটাউন স্টার্টার জ্যাকেট। ওই জ্যাকেট কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তার গলায় গুলি করার অভিযোগ ওঠে তিন কিশোরের বিরুদ্ধে। দু’ঘণ্টা পর তার মৃত্যু হয়।
তুচ্ছ কারণে এক কিশোরকে মেরে ফেলার এই ঘটনায় গোটা বাল্টিমোরে সাড়া পড়ে যায়। তখন হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত তিন কিশোরকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
৩৬ বছর কারাভোগের পর তখনকার তিন কিশোরের বয়স এখন ৫০ বছরেরও বেশি। চলতি বছর এক প্রসিকিউটর জানান, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক ছিল না। খুনটি তারা করেননি, করেছে অন্য এক কিশোর। কিন্তু কারাভোগ করছেন তারা।
সোমবার জেল থেকে মুক্তি পেলেন ওই তিন নির্দোষ ব্যক্তি। তাদের নাম আলফ্রেড চেস্টনাট, র্যানসম ওয়াটকিন্স এবং অ্যান্ড্রু স্টুয়ার্ট।
চেস্টনাট বলেন, আমি সব সময় ভাবতাম, আমার সঙ্গে কেন এমনটি হচ্ছে? সব সময় স্বপ্ন দেখতাম একদিন হয়তো মুক্তি মিলবে।
সম্প্রতি বাল্টিমোরের পুরনো কিছু মামলার তথ্য প্রমাণ নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করেছে প্রসিকিউটর অফিসের একটি ইউনিট। তখন তারা স্কুলে গুলি চালিয়ে হত্যার এই মামলায় বেশকিছু ত্রুটি খুঁজে পান। তদন্তের পর প্রমাণিত হয়, ডিওয়িট ডাকেট নামের অন্য এক কিশোর খুনটি করেছেন, তবে তিনি এখন মৃত।
সোমবার বাল্টিমোর সার্কিট কোর্টের জজ তাদের নির্দোষ বলে রায় দিয়ে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
স্টেট অ্যাটর্নি ম্যারিলিন মোসবি বলেন, এটি খুব হৃদয় বিদারক ঘটনা। আমরা এমন একটি পৃথিবীতে বাস করি যেখানে তিনজন নির্দোষ লোককেও ৩৬ বছর কারাভোগ করতে হয়। আজকের এই রায় কোনো বিজয় নয়। এটি একটি ট্র্যাজেডি যে, তাদের জীবন থেকে ৩৬ বছর কেড়ে নেওয়া হলো।
সবখবর/ আওয়াল